নারী কয় প্রকার ও কী কী?
উদাহরণ সহ
ব্যাখ্যা সমুদ্র শাস্ত্র
What are the types of Samudra Shastra women?
BY-Dr. Abu Huraiya Akash
নারীর মনের গভীরতা ও শারীরিক বর্ণনার রহস্য কি এত সহজে করা সম্ভব? কখনও কি জানতে পেরেছে পুরুষ, কতটা পথ পেরলে তবে নারী হওয়া যায়? নারী কথাটা শুনতে যতটা সহজ বুঝতে ততটাই কঠিন। তাই যুগে যুগে কবিরা বলে এসেছেন, প্রকৃতির মতো নিবিড় রহস্য লুকিয়ে রয়েছে এই নারী শক্তির মধ্যে। তবে এই রহস্য জানার বা বোঝার চেষ্টা আদিকাল থেকেই চলে আসছে। আদিকাল থেকেই পণ্ডিতরা নারীকে চারটি শ্রেণিতে ভাগ করেছেন— পদ্মিনী, চিত্রিণী, শঙ্খিনী ও হস্তিনী।
এ বার এই চারটি শ্রেণির নারীকে কী ভাবে চেনা যায় তার উপায় দেখে নেওয়া যাক।
পদ্মিনী
এই রমণীর নামেই লুকিয়ে আছে এদের রহস্য। এদের শরীর হয় ভীষণ আকর্ষণীয়। এঁদের চোখ হয় পদ্মের মতো। মুখে স্মিত হাসি লেগেই থাকে। কোঁকড়ানো চুল। এঁরা মধুর ভাষিণী হন। সাধারণত এঁরা সত্যি কথা বলতে পছন্দ করেন। অতি যৌনতা এঁদের একদম পছন্দ নয়। বরং ঘুম এঁদের ভীষণ প্রিয়। পুজোপাঠ করতে খুব ভালবাসেন ও গুরুজনদের প্রতি শ্রদ্ধাভক্তি সর্বদা থাকে। শরীর হয় সুললিত। এক কথায়, সুন্দর হন এঁরা। নাচ-গানে পারদর্শী হন। রমণীকুলে এঁদের সর্বোত্তম মানা হয়।
চিত্রিণী
এই রমণীর শরীর দীর্ঘ বা হ্রস্ব কোনওটাই হয় না, প্রমাণ শরীরের অধিকারী হন এই চিত্রিণী নারীরা। এঁদের নাভি হয় সুগভীর। মৃদু হাসি মুখে প্রায়ই লেগে থাকে। ধীরেসুস্থে চলাফেরা করেন,কোনও কাজে অস্থিরতা দেখান না। চুল হয় মসৃণ। খাওয়া ও ঘুম হয় মধ্যম। শরীর হয় খুব নরম। অন্য পুরুষদের প্রতি আকর্ষণ একদমই থাকে না।
শঙ্খিনী
এই ধরনের রমণী হন দীর্ঘ শরীরের অধিকারী। এঁদের চোখ, কান, নাক ও হাত-পা খুব বড় হয়। এঁরা একটু চঞ্চল প্রকৃতির হন। শঙ্খিনী নারীরা হন মধ্যম প্রকৃতির।
হস্তিনী
সাধারণত ভারী শরীরের অধিকারী হন এই রমণীরা। গলার আওয়াজ হয় প্রচণ্ড তীব্র। জোরে কথা বলেন। প্রচুর পরিমাণে খেতে ও ঘুমোতে ভালবাসেন। অনেকের মিথ্যা বলার অভ্যাস দেখা যায়। ধর্মে-কর্মে মন প্রায় থাকে না বললেই চলে। পরকিয়াতেও নাকি আসক্তি থাকে এঁদের কারও কারও।
উপরোক্ত গুলো বাৎস্যায়নের কামসূত্র বর্নিত ও ভারতচন্দ্র রায়গুনাকরের অনুদিত,এরপরে আসি হস্তরেখাশাস্ত্র বা সমুদ্রশাস্ত্র অনুসারে। সমুদ্রশাস্ত্র মতে, কোনও নারীর পূর্ব অভিজ্ঞতা তার মধ্যে বেশ কিছু 'সত্ত্ব'-এর জন্ম দেয়। এই পূর্ব অভিজ্ঞতা আসলে তার পূর্বজন্মের অভিজ্ঞতা। সুতরাং সে এই 'সত্ত্ব'গুলি নিয়েই জন্মায়। এই গুণ বা সত্ত্বের নিরিখেই নারীকে ৯টি শ্রেণিতে ভাগ করে
সমুদ্রশাস্ত্র।
১. দেবসত্ত্ব— পবিত্র এবং সদ্গুণসম্পন্না নারী। তাঁর উপস্থিতি সুগন্ধবাহী। এই নারী সুলক্ষণা এবং মৃদুভাষীনী।
২. গন্ধর্বসত্ত্ব— এই নারী প্রেমিকা প্রকৃতির। বুদ্ধিমতী, সৃজনশীল, কলাপারঙ্গমা। তবে এঁরা খুব বেশিমাত্রায় বিলাস পছন্দ করেন।
৩. যক্ষসত্ত্ব— সম্পদের উপরে এঁরা প্রভাব ফেলতে পারেন। এঁদের দেহসৌন্দর্য দেখার মতো। এঁরা মাংস ও মদ পছন্দ করেন। কিন্তু এঁরা সাধারণত একগুঁয়ে প্রকৃতির হয়ে যাকেন।
৪. মনুষ্যসত্ত্ব— প্রকৃতিতে একান্ত মানবিক, দয়া-মায়া সম্পন্না, বন্ধুভাবাপন্না। এঁরা পরিশ্রমী এবং সৎ। সেই সঙ্গে উদারচেতা, ধর্মভীরু। এঁদের গাত্রবর্ণ গমের মতো এবং এঁরা তীক্ষ্ণনাসা।
৫. পিশাচসত্ত্ব— নাম থেকেই বোঝা যায়, এঁদের স্বভাবে পৈশাচিকতা বর্তমান। এঁরা সাধারণত খর্বাকৃতি এবং হীন চরিত্রসম্পন্না হয়ে থাকেন। এঁদের খাদ্যাখাদ্য বিচার শিথিল হয়। এঁরা সহজে সন্তুষ্ট হন না।
৬. নাগসত্ত্ব— এঁরা অসম্ভব দ্রুততা পছন্দ করেন। এঁদের দেহ লতাসদৃশ। এঁরা সহজে ক্লান্তও হয়ে পড়েন। এঁদের চরিত্রে এমন কিছু থাকে, যা সর্বদা সন্দেহের উদ্রেক করে। এঁদের স্মৃতিশক্তি দুর্বল হয়।
৭. কাকসত্ত্ব— এঁদের সহমর্মী মানসিকতা সম্পন্না বলে মনে হলেও এঁরা আদপে তা নন। এঁদের চোখে একটা অস্বাভাবিকত্ব দেখা যায়। খাদ্য ও সম্পদের প্রতি এঁদের লালসা বিদ্যমান।
৮. বানরসত্ত্ব— এঁরা অতিরিক্ত মাত্রায় সংবেদনশীল। কেবল নিজেদের নিয়েই ব্যস্ত থাকেন। সর্বদা এঁরা নিজেদের স্পর্শ করেন। এঁরা অমিতবাক এবং অনুকরণপ্রিয়।
৯. খরসত্ত্ব— এঁরা মানবিকতা রহিত। সমাজের বিষয়েও মাথা ঘামান না। এঁরা নোংরা থাকতে ভালবাসেন। এঁদের ধর্ম বিষয়ে উৎসাহ কম। এঁরা সাধারণত বিশ্বস্ত হন না।
মূলত নারীর বিভাগ গুলো এইভাবেই দেখানো হয়েছে।
(বিদ্রঃ উত্তর পড়ে নিজের সাথে মিল খুঁজে পেলে বা খুঁজতে গেলে সেটা পাঠকের নিজস্ব মানসিক সমস্যা, লেখক তার জন্য দায়ী নয়।)